নারায়নগঞ্জ,প্রতিনিধি
নারায়নগঞ্জ হাই স্কুলে তিনমাস যাবৎ অনুপস্থিত থেকে প্রধান শিক্ষক মাহমুদুল হাসান সহ তিন শিক্ষক ৫ মাস যাবৎ বেতন ভাতা নিচ্ছে। তদন্ত কমিটি গঠন। ২১লাখ টাকা জমা প্রদানের নির্দেশ তদন্ত কমিটির
নারায়নগঞ্জ হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৫ মাস যাবত ছুটি কিংবা কর্তৃ পক্ষের অনুমোদন ছাড়াই অনুপস্থিত থেকেই সরকারী এবং স্কুল তহবিল থেকে বেতন ভাতা নিচ্ছেন প্রধান শিক্ষক সহ আরো দুই শিক্ষক। এরা হলেন প্রধান শিক্ষক মাহমুদুল হাসান ভুইয়া, সিনিয়র শিক্ষক মাহবুবুর রহমান এবং খন্ডকলীন শিক্ষক সাথী রানী সাহা।
স্কুলে কর্মরত একাধিক শিক্ষক অভিযোগ করেন সাম্রতিক গণ আন্দোলনের পর দুর্নীতি ও আর্থিক অনিয়মের দায়ে অভিযুক্ত হওয়ায় পর থেকে স্কুল ও কলেজ শাখায় কর্মরত ১০৫জন শিক্ষক এই তিনজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হকে কাছে লিখিত আবেদন করেন।
পরে তাদের স্কুলে প্রবেশ করতে বাধা দিয়ে আসছে। আবেদনে উল্লেখ করা হয় মাহমুদুল হক প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করার সময় প্রতিমাসে নিয়ম বহিঃভুত ভাবে স্কুলের নিজস্ব তহবিল থেকে সরকারী বেতনের অতিরিক্ত ৬২হাজার টাকা প্রতিমাসে ভাতা নিয়ে গেছেন। একই ভাবে সিনিয়র শিক্ষক মাহবুবুর রহমান এবং খন্ডকালীন শিক্ষক সাথী রানী সাহাকে শিফট ইনচার্জের নাম করে দায়িত্ব দিয়ে তাদেরকেও একই ভাবে বেতনের অতিরিক্ত ৬০হাজার টাকা করে প্রতিমাসে স্কুল তহবিল থেকে ভাতা প্রদান করেন তৎকালীন গভনিং বডি।
শিক্ষকরা অভিযোগ করেন, গত বছরের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা কোচিং ফি এর টাকা নিয়ম অনুযায়ী সকল শিক্ষকদের সমপরিমান ভাবে বন্টন না করে সেখান থেকে ৪লাখ টাকা তারা তিনজন ভাগাভাগি করে নিয়ে যায়। একই অভিযোগে শিক্ষকরা জানান, শিক্ষকদের আনন্দ ভ্রমনের নামে প্রধান শিক্ষক স্কুলের তহবিল থেকে তৎকালীন সভাপতি ও সাবেক জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চন্দন শীল কে ৮লাখ টাকা প্রদান করেন।
এসকল অনিয়মের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের কাছে শিক্ষকদের আবেদনের প্রেক্ষিতে তৎকালীন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নুরুন্নবী ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ম্হোাম্মদ ইউনুসের মাধ্যমে একটি তদন্ত কমিটি করেন। তদন্ত কমিটির সদস্য জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ ই্উনুস জানান তদন্ত শেষ করে একমাস আগে আমরা জেলা প্রশাসকের কাছে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছি। সেখানে ২১লাখ টাকা অনিয়মের প্রমান পাওয়া গেছে।
তিনি জানান, তদন্ত কমিটির কাছে অভিযুক্তরা জানিয়েছে তিনজনই ছুটিতে আছে। তবে তারা কিভাবে বেতন নিচ্ছে এ ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না। তদন্তের সময় স্কুলে গিয়ে তাদের উপস্থিত পাওয়া যায়নি।এদিকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নুরুন্নবী জানান, আমি বর্তমানে ট্রেনিংয়ে আছি। তদন্ত রিপোর্ট জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে জমা দিয়ে এসেছি। তিনি বলেন এই তিনজন শিক্ষক আমাদের জানিয়েছে তারা ছুটিতে আছে। তবে কে তাদের ছুটি অনুমোদন করেছে সেটা তিনি জানেন না।
তারা কিভাবে বেতন ও ভাতা নিচ্ছে সেটাও তিনি জানেন না।
এদিকে নারায়নগঞ্জ হাই স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষকরা সোমবার সকালে সমাবেশ করে সেখানে সকলে ঐক্যবদ্ধ ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন স্কুলের অর্থ আত্মসাৎ করা এই তিনজন শিক্ষক’কে তারা স্কুলে প্রবেশ করতে দিবে না। তারা জানান বর্তমান গভনিং বডির সদস্যরা তাদের উপর চাপ প্রয়োগ করছে হেডমাষ্টারকে স্কুলের দায়িত্ব পালন করার সুযোগ করে দিতে কিন্তু শিক্ষকরা এ প্রস্তাব মেনে নেয়নি।
বর্তমানে স্কুলে অস্থায়ী ভাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবদুল ওহাব জানান আমাদের বেতন শিটে স্কুল দীর্ঘ দিন অনুপস্থিত থাকা অবস্থায় মাহমুদুল হাসান ভুইয়া স্বাক্ষর করতে পারে না। তারপরও অনিয়মতান্ত্রক ভাবে মাহমুদুল হাসান ভুঁইয়া স্বাক্ষর করছেন।বর্তমান সভাপতি মাননীয় জেলা প্রশাসক প্রশাসক মহোদয় এটা বলতে পারবেন। তিনি জানান এই তিনজন শিক্ষক ছুটিতে আছেন কিনা সেটাও তার জানা নেই। স্কুলে তাদের ছুটির কোন দরখাস্ত জমা নাই।
তিনি জানান,জেলা প্রশাসক তাকে মৌখিক নির্দেশে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করতে বলেছে।এদিকে মাহমুদুল হাসান ভুইয়া ,মাহবুবুর রহমান ও সাথী রানী সাহার সাথে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগ করা হলে তারা ফোন রিসিভ করেনি।
জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হক জানান,তদন্ত রিপোর্ট পেয়েছি। বিষয়টি আমরা দেখছি। তিনি জানান, এব্যপারে আমি সকল শিক্ষকদের সাথে কথা বলেছি।
Leave a Reply