জাতীয় ডেস্ক
আওয়ামী লীগকে নিজের ভুল বুঝে মুখে নয়, অন্তর থেকে শুদ্ধ হয়ে আসতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান। আজ শনিবার সকালে নরসিংদী সদর উপজেলার মেহেরপাড়া ইউনিয়নে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জ্ঞাপন ও আহত ব্যক্তিদের দ্রুত সুস্থতা কামনা অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠান আয়োজন করে মেহেরপাড়া ইউনিয়ন বিএনপি।
আবদুল মঈন খান বলেন, ‘আমরা প্রতিহিংসার রাজনীতি পছন্দ করি না। আওয়ামী লীগ প্রতিহিংসার রাজনীতি করতে গিয়ে এর আগুনে এখন নিজেরাই জ্বলছে। তাদের প্রধানমন্ত্রীকে কাপুরুষের মতো ভারতে আশ্রয় নিতে হয়েছে। স্বৈরাচার পতনের পর দেশে সত্যিকার গণতন্ত্র আসবে। আর আওয়ামী লীগকে নিজের ভুল বুঝে মুখে নয়, অন্তর থেকে শুদ্ধ হয়ে আসতে হবে।’
অন্যায় করে কেউ টিকে থাকে না জানিয়ে আবদুল মঈন খান বলেন, গত ১৫ বছরে স্বৈরাচার সরকার দেশে গণতন্ত্র হত্যা করে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিল। এ সময়ে এক লাখ গায়েবি মামলায় ৫০ লাখ বিএনপি নেতা-কর্মীকে আসামি করেছিল। এটাই সত্য, অন্যায় করে কেউ কখনো টিকে থাকতে পারে না। তারা মনে করেছিল, এই দেশ তাদের পৈতৃক সম্পত্তি। স্বৈরাচারমুক্ত করতে ছাত্র–জনতাকে রক্ত দিয়ে মূল্য দিতে হয়েছে।
মেহেরপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবদুর রশিদ মিয়ার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন পলাশ উপজেলা বিএনপির সভাপতি এরফান আলী, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সম্পাদক বাহাউদ্দীন ভূঁইয়া, ঘোড়াশাল পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন, জেলা যুবদলের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি শাহেন শাহ, মেহেরপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি এম এস আলম মোল্লা প্রমুখ। অনুষ্ঠানে নিহত চারজনের পরিবারের হাতে দলের পক্ষ থেকে আর্থিক সহযোগিতা তুলে দেন প্রধান অতিথি আবদুল মঈন খান।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেন, স্বৈরাচার সরকার দেশে ব্যাংক লুট করেছে, মেগা প্রজেক্টের নামে মেগা দুর্নীতি করেছে, ব্যবসা-বাণিজ্য লুট করেছে, টাকা পাচার করেছে। ৫০ হাজার কোটি টাকার নোট ছাপিয়ে অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে। যারা এসব লুটপাট করে দেশকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল, তারা দেশে থাকতে পারে না।
অন্তর্বর্তী সরকারকে সময় দেওয়ার বিষয়ে আবদুল মঈন খান বলেন, ‘আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের মুখে অনেক কথা শুনছি, নিশ্চয়ই যুক্তিযুক্ত কথা বলছেন তাঁরা। আমরা অবশ্যই অন্তর্বর্তী সরকারকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সংস্কারের যৌক্তিক সময় দেব। আমরা চাই, অত্যাবশ্যক সংস্কার শেষে জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার, যার হাতে তাঁরা ক্ষমতা তুলে দেবেন। এটাই হচ্ছে সৎ রাষ্ট্রের নীতি। তবে যুক্তিযুক্ত সময় ঠিক কতটুকু, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। সংস্কার চলমান প্রক্রিয়া, সব সংস্কার কিন্তু কারও পক্ষে করা সম্ভব নয়। অত্যাবশ্যক সংস্কার দ্রুত শেষ করে নির্বাচন দিতে হবে।’
আবদুল মঈন খান বলেন, ‘যারা মানুষের অধিকারে বিশ্বাস করে, তারা ঐক্যবদ্ধ হব, বাংলাদেশকে নতুনভাবে গড়ে তুলব। দ্বিতীয়বার স্বাধীনতা পেয়েছি। এমন কোনো ভুল করা যাবে না, যাতে তৃতীয় স্বাধীনতা চাইতে হয়।’
Leave a Reply