ক্রীড়া ডেস্ক
আনুষ্ঠানিকভাবে আগামী বছরের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সূচি ও গ্রুপ পর্ব নিয়ে এখনো কিছু জানায়নি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থা (আইসিসি)। তবে এরই মধ্যে গুঞ্জন উঠেছে, ২০২৫ সালের ১ মার্চ লাহোরের আইকনিক গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে টুর্নামেন্টে মুখোমুখি হবে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত ও পাকিস্তান। ‘এ’ গ্রুপে পড়েছে দুই দল। তাদের বাকি দুই সঙ্গী বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ড।
আইসিসিকে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) সূচির এমন ড্রাফট দিয়েছে বলে জানিয়েছে আল জাজিরা ও মিন্টসহ বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম। লম্বা সময় ধরে ২০২৫ সালে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি আয়োজনের চেষ্টা করছে পাকিস্তান। আয়োজক স্বত্ব পেলেও সেটি শঙ্কায় পড়েছে ভারতের যাওয়া-না যাওয়া নিয়ে। এ নিয়ে বিসিসিআইয়ের (ভারত ক্রিকেট বোর্ড) সঙ্গে গত ওয়ানডে বিশ্বকাপেও বেশ আলোচনা ও বাতচিত হয়েছে পিসিবির।
ভারত যদি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলতে পাকিস্তানে না যায়, পিসিবিও ২০২৩ বিশ্বকাপে দল পাঠাবে না বলে হুমকি দিয়েছিল। তবে ঠিকই বাবর আজমরা ভারতে গেছেন। সে সময় দুই দেশের সম্পর্কে কিছুটা উন্নতি হয়েছিল বলে মনে করা হয়েছিল। সে কারণে এবার মনে করা হচ্ছে, পাকিস্তান দল ওয়ানডে বিশ্বকাপে খেলায় ভারত দলও চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলতে পাকিস্তান সফরে যেতে পারে। তবে এ নিয়ে ধোঁয়াশা রয়ে গেছে।
সেই ধোঁয়াশার মধ্যে গুঞ্জন উঠেছে, ২০২৫ চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আয়োজক আইসিসিকে গত ৩ জুলাই টুর্নামেন্টের একটি খসড়া সূচি প্রস্তাব করেছে। প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়ার (পিটিআই) বরাতে এ খবর দিয়েছে কয়েকটি ক্রীড়ামাধ্যম। সেই প্রস্তাবিত সূচিতে ১ মার্চ রয়েছে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ। কিন্তু ভারত আদৌ পাকিস্তানে যাবে কি না, সেই সংশয় এখনো কাটেনি। তবে মাস কয়েক আগে পাকিস্তানে ভেন্যু পরিদর্শনে গিয়েছিল আইসিসির একটি পর্যবেক্ষক দল।
পাকিস্তানে যাওয়া নিয়ে বিসিসিআই এখনো কোনো সম্মতি দেয়নি। তবে আইসিসির এক বোর্ড সদস্যের বরাতে পিটিআই তাদের এক প্রতিবেদনে লিখেছে, ‘আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে অংশগ্রহণকারী দেশের সমস্ত বোর্ড প্রধান (বিসিসিআই ছাড়া) তাঁদের সম্পূর্ণ সমর্থনের আশ্বাস দিয়েছেন। আর বিসিসিআই এ নিয়ে ভারত সরকারের সঙ্গে পরামর্শ করবে এবং আইসিসিকে জানাবে।’
পিটিআই আরও জানিয়েছে, নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে প্রস্তাবিত সূচিতে ভারতের সব ম্যাচ রাখা হয়েছে লাহোরে। আইসিসির সেই বোর্ড সদস্যের বরাতে সংবাদমাধ্যমটির খবর, ‘আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির জন্য পিসিবি ১৫ ম্যাচের ড্রাফট বা প্রস্তাবিত সূচি দিয়েছে। টুর্নামেন্টের সাত ম্যাচ হবে লাহোরে, তিন ম্যাচ করাচিতে এবং পাঁচ ম্যাচ রাওয়ালপিন্ডিতে। উদ্বোধনী ম্যাচ হবে করাচিতে। দুই সেমিফাইনাল হবে করাচি ও রাওয়ালপিন্ডিতে আর ফাইনাল লাহোরে। ভারতের সব ম্যাচ হবে লাহোরে (যদি তারা সেমিফাইনালেও ওঠে)।’
২০২৩ বিশ্বকাপের আগে একই বছর এশিয়া কাপ আয়োজনের কথা ছিল পাকিস্তানের। কিন্তু নিজেদের মাটিতে এই মহাদেশীয় টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে পারেনি পিসিবি। থাকতে হয় সহ-আয়োজক হিসেবে। ‘হাইব্রিড মডেলে’ এশিয়া কাপ আয়োজিত হয় শ্রীলঙ্কায়। ভারত যদি না যায়, তবে কি আবারও এমন কিছু দেখা যাবে? সেই আলোচনাও চলছে। সবশেষ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি আয়োজিত হয়েছিল ২০১৭ সালে। সেবার ওভালে ফাইনালে ভারতকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে শিরোপা জেতে পাকিস্তান।
সংবাদমাধ্যম মিন্ট জানিয়েছে, আয়োজক পাকিস্তান আইসিসির এই আগামী টুর্নামেন্টের সূচি ধার্য করেছে ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ৯ মার্চ। ফাইনালের জন্য রিজার্ভ ডে রাখা হয়েছে ১০ মার্চ। স্বাগতিক পাকিস্তান ছাড়াও চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে অংশ নেবে আইসিসি র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষে থাকা সাত দল। এই আট দলকে ভাগ করা হবে দুই গ্রুপে। পিসিবির প্রস্তাবিত ‘এ’ গ্রুপে পড়েছে পাকিস্তান, ভারত, বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ড। ‘বি’ গ্রুপে আছে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, আফগানিস্তান ও নিউজিল্যান্ড। অবশ্য সূচি থেকে গ্রুপের এখনো কিছুই নিশ্চিত হয়নি। আইসিসি বা পিসিবি—কোথাও থেকে আসেনি কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি। কয়েকটি দেশি ও বিদেশি সংবাদমাধ্যম এই সূচি ও গ্রুপ প্রকাশ করেছে।
প্রস্তাবিত ড্রাফট অনুসারে গ্রুপ পর্ব
গ্রুপ এ: পাকিস্তান, ভারত, নিউজিল্যান্ড ও বাংলাদেশ।
গ্রুপ বি: অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, আফগানিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকা।
Leave a Reply